শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
রাজস্ব বঞ্চিত সরকার
নিজস্ব প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধপন্থায় ভারত থেকে সেট টপ বক্সের মাধ্যমে প্রকাশ্যে কেবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় মিন্নাত আলী। মিন্নাত আলীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে দৌলতপুর নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের লিখিত নির্দেশ দিলেও ব্যবস্থা গ্রহনে অপারগতা প্রকাশ করেন দৌলতপুরের নির্বাহী অফিসার। অপরদিকে দৌলতপুর নির্বাহী অফিসারের অদৃশ্য কারণে স্থানীয় প্রভাবশালী মিন্নাত আলী তার বাহিনী দিয়ে বাংলাদেশ বিটিভি কর্তৃক কেবল অপারেটর এর লাইসেন্স ধারী প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা বন্ধ করতে দীর্ঘদিন ধরে ডিস লাইনের তার কাটা ছেড়া ও অফিস ভাংচুর সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর নির্বাহী অফিসারকে ম্যানেজ করে অবৈধপন্থায় ভারত থেকে সেট টপ বক্সের মাধ্যমে প্রকাশ্যে কেবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মিন্নাত আলী। এছাড়াও সে দীর্ঘদিন যাবৎ জোরপূর্বক গ্রাহকদের সংযোগ নিতে বাধ্য করে, যা কেবল অপারেটর আইনের পরিপন্থী। বিষয়টি লাইসেন্স কর্তৃপক্ষ তদন্তপূর্বক মিন্নাত আলীর লাইসেন্স বাতিল করতে বাধ্য হয়। এক পর্যায়ে বাংলালিংক ডিস কেবল নেটওয়ার্ক এর স্বত্ত্বাধীকারী মিন্নাত আলী কেবল অপারেটর লাইসেন্স এর শর্ত লংঘন করার অপরাধে কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন ২০০৬ এর ১১(১) ধারা অনুসারে যথাযথ কর্তৃপক্ষ সিও-২৩৭ সংখ্যক কেবল অপারেটর এর লাইসেন্স বাতিল করেন। যা সদয় অবগতি ও কার্যার্থে বাংলাদেশ টেলিশন প্রধান কার্যালয় থেকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দৌলতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর পত্র প্রেরন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত দৌলতপুর নির্বাহী অফিসারের অদৃশ্য কারনে মিন্নাত আলীর অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
এ দিকে বর্তমানে লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী গিয়াস উদ্দীন বলেন, আমি বৈধ লাসেন্স নিয়েও অত্র এলাকায় ডিস লাইনের সংযোগ দিতে পারছি না। এ বিষয়ে আমি দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ভাবে জানালেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে আমার ব্যবসা চরমভাবে হুমকির সম্মুখে পড়েছে। তাই আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানাচ্ছি যতদ্রুত সম্ভব এই অবৈধ ক্যাবল অপারেটর বন্ধের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
এদিকে বর্তমানে লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা করতে না দেওয়ায় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং অবৈধভাবে ভারতীয় কোম্পানীর সহযোগীতায় মিন্নাত আলী কেবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা করে হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে টাকা পাঠাচ্ছে। এ ঘটনায় দৌলতপুর নির্বাহী অফিসার কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় কুষ্টিয়ার সচেতন মহলে ব্যাপক কানাঘুষা চলছে।
ন্যাশনওয়াইড মিডিয়া লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুলাই ২০১৭ ইং তারিখে ন্যাশনওয়াইড মিডিয়া লিমিটেড এর পক্ষ থেকে ঝবঃ ঞড়ঢ় ইড়ীবং/ উঞঐ এর মাধ্যমে পাইরেসি করে স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল প্রদর্শন বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করেন। যা সদয় অবগতির জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশন মহা-পরিচালক, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দৌলতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি প্রদান করেন। এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ দারা বলেন, বিষয়টি বিটিএসএল ও নির্বাহী কর্মকর্তার বিষয়, এটা আমার কিছু করার নেই।
বাংলাদেশ টেলিভিন প্রধান কার্যালয়, ন্যাশনওয়াইড মিডিয়াল লিমিটেড ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে দৌলতপুর নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিতভাবে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলা হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় গতকাল দৌলতপুর নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম বন্ধ আছে যার কারনে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। আমি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করেছি।
এ ঘটনায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হায় বলেন, আমি এ বিষয়ে নির্দেশ প্রদান করেছি, কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।