শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন
এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক: পবিত্র কোরান মজিদে সুরা নিসা নাজিল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত উত্তরাধিকার কেবলমাত্র পুরুষ আত্মীয় ও জ্ঞাতিবর্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তীতে তৃতীয় হিজরী সনের শেষ ভাগ থেকে আরম্ভ করে চতুর্থ হিজরী শেষ কিংবা পঞ্চম হিজরী সনের প্রথম ভাগ পর্যন্ত সুরা আল নিসা নাজিল হওয়ার পর মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের সূচনা ঘটে। পরবর্তীতে অবশ্য হযরত আবু হানিফ (রা), হযরত আবু ইউসুফ (রা), হযরত ইমাম মোহাম্মদ (রা) এবং হযরত শোবইয়া (রা) তাদের সুচিন্তিত মতবাদের মাধ্যমে দূরবর্তী জ্ঞাতিবর্গের এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়াদের উত্তরাধিকারত্বের ক্ষেত্রে সুচিন্তিত মতামত পোষণ করেন।
মুসলিম আইনে উত্তরাধিকারত্বের ক্ষেত্রে দুইটি দিক নির্দেশনা লক্ষ্য করা যায় যেমন; ১। প্রতিবন্ধকতা ২। অ-প্রতিবন্ধকতা।
উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বা বঞ্চিত ব্যক্তিগণ হচ্ছে, ক) ক্রীতদাস খ) হত্যাকারী গ) ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ঘ) আঞ্চলিকভাবে বঞ্চিত ব্যক্তি বা সমাজ। এ সকল ক্ষেত্রে পুং লিঙ্গ বা স্ত্রী লিঙ্গের কোন বর্ণনা নাই। পুরুষ এবং স্ত্রীলোক ক্রীতদাস, হত্যাকারী, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হতে পারে।
অ-প্রতিবন্ধকতা শ্রেণীর উত্তরাধিকারী হচ্ছে, ক। অংশীদার খ। অবশিষ্ট ভোগী গ। দূরবর্তী জ্ঞাতি ঘ। অসম্পর্কিত উত্তরাধিকারী এবং ঙ। বিবিধ প্রকার উত্তরাধিকারী। তাছাড়া মুসলিম আইনে উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে সকল সুস্বাস্থের অধিকারী সহ শারীরিক অক্ষমতা বিকলঙ্গতা, অঙ্গহানী, প্রতিবন্ধি এবং তৃতীয় লিঙ্গকে উত্তরাধিকারত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়নি। কেবলমাত্র মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে যৌন-অক্ষম ব্যক্তিকে বিবাহ করা হতে নিষেধ বা নিবৃত্ত করা হয়েছে।
যেসব হিজড়ার মাঝে পুরুষালি স্বভাবের প্রাধান্য থাকে তাদেরকে পুরুষ আর যাদের মাঝে নারী স্বভাবের প্রাধান্য তাদেরকে নারী হিসেবে বিবেচনা করে সম্পত্তি বণ্টনের বিধান দিয়েছে ইসলাম। আর যেসব হিজড়ার মাঝে নারী-পুরুষ উভয় বৈশিষ্ট্যই সমভাবে বিদ্যমান, তাদেরকে নারী হিসেবে সম্পত্তি প্রদানের বিধান দিয়েছে ইসলাম।