সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন
কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ আঃ মজিদ। কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক সাটলিপিকার। সারা জীবনের অর্জিত টাকা দিয়ে কুমারখালী বাজার স্টেশন রোডে একখানা দোকান ক্রয় করেছিলেন। বাঁকী জীবন সচ্ছলতার আশায় এক বুক স্বপ্ন নিয়ে একটি মুদি দোকানও করেছিলেন। বিনিয়োগও করেছিলেন প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। কিন্তু বিধিবাম। একশ্রেণীর ক্ষমতাসীনদের কু-নজরে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বুধবার এ দোকান ঘরটি ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। সেইসাথে চুরমার করে দিয়েছে যায় আঃ মজিদের স্বপ্ন ও স্বাধ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কুমারখালীর সেরকান্দি মৌজার আর.এস ১৭৯ নং খতিয়ানের ১২৬৩ নং দাগের অবস্থিত দোকান ঘরটি জনৈক মাহবুবুর রহমান মূল মালিকের কাছ থেকে গত ১/১/১৯৭৬ সালে পজেশন ক্রয় করে মুদি দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছিল। এরপর দোকানের আর.এস প্রজাগণ গত ৭/৮/১৯৭৯ ইং তারিখে ৪০১১ নং কবলা দলিল মূলে উক্ত দোকানসহ জমি জনৈকা সিরাজুন নাহারের নিকট বিক্রি করে দেন। উক্ত ক্রেতা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে দোকানের ভাড়া বৃদ্ধি করায় পজেশন ক্রেতা রেন্ট কন্ট্রোল আদালতে ভাড়া প্রদান করে আসছিল। এরপর গত ১/১/১৯৯৮ ইং তারিখে উভয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা হয় এবং ২০১৭ সালে এক বছরের ভাড়া প্রদানে রশিদ প্রাপ্ত হয়। এরপর জনৈকা সিরাজুন নাহার গত ১৪/০৫/২০১৭ ইং তারিখে ২৩৭৪ নং কবলা দলিল মূলে উক্ত দোকানসহ তলস্থ .০১৩১ একর জমি জনৈকা সোনালী আক্তারের নিকট বিক্রয় করে দেন। বর্তমান ক্রেতা সোনালী আক্তার অন্যায়ভাবে দোকান পজেশন ক্রেতার উপর বেশী ভাড়া চাপিয়ে দেয়ায় পজেশন গ্রহীতা জনৈক মাহবুবুর রহমান কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও রেন্ট কন্ট্রোল আদালতে মিস ২২/১৮ নং মোকদ্দমা রুজু করতঃ ভাড়ার টাকা জমা প্রদান করে আসছিল। এরপর উক্ত পজেশন গ্রহীতা মাহবুবুর রহমানের টাকার বিশেষ প্রয়োজন দেখা দিলে গত ২২/৭/২০১৭ ইং তারিখে নগদ বাইশ লক্ষ টাকা বুঝে পেয়ে কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক সাটলিপিকার আঃ মজিদ বরাবর দোকানের পজেশন হস্তান্তর করেন। বর্তমান পজেশন গ্রহীতা উক্ত দোকান নিয়ে আদালতে কোনরুপ মামলা মোকদ্দমা আছে তা আদৌ জানতেন না। তিনি সরল বিশ্বাসে উক্ত পজেশন ক্রয় করেন। এরপর দোকান ও জমি ক্রেতা সোনালী আক্তার ও তার স্বামী জসিম উদ্দিন অন্যায়ভাবে দোকান ঘরটি জোরপূর্বক দখল নিতে গেলে জনৈক মাহবুবুর রহমান মিস ২২/১৮ নং মোকদ্দমায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত করলে বিজ্ঞ আদালত ১ নং বিবাদী অর্থাৎ সোনালী আক্তারের উপর রেষ্ট্রিনিং অর্ডার প্রদান করেন। উক্ত বিবাদী সোনালী আক্তার ও তার স্বামী অবৈধভাবে দোকান ঘরটি দখল করতে ব্যর্থ হয়ে স্থানীয় পৌর মেয়র ও তার লোকজনকে ম্যানেজ করে অন্যায় ও অবৈধভাবে নালিশী দোকানঘরটি ভাঙার ষড়যন্ত্র অব্যহত রাখে। অবশেষে বর্তমান পজেশন ক্রেতা আঃ মজিদ বাদী হয়ে কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে সোনালী আক্তারকে বিবাদী করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ চাইলে বিজ্ঞ আদালত সকল কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বিবাদীর উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করে। যার মামলা নং দেং-৮৭/১৮। আদালতের সকল আদেশ নিষেধ উপেক্ষা করে গতকাল বুধবার কুমারখারী পৌর মেয়র বিবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শণ করে আঃ মজিদের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক সাটলিপিকার আঃ মজিদ জানান, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আদালতের নিষেধ উপেক্ষা করে আমার দোকানঘরটি ভেঙ্গে দিয়েছে। আমার উপর এ অন্যায় ও জুলুমের বিচার চাই। স্থানীয় পৌর মেয়র জানান, দোকান ঘরটি নকশা অনুযায়ী নির্মিত না হওয়ায় এবং পুরাতন গৃহ হওয়া ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।