বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

ঘোষনা :
  সম্পূর্ণ আইন বিষয়ক  দেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা   দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল এর  পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা   । 
সংবাদ শিরোনাম :
ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাবে যা করণীয় জমি আপনার, দখল অন্যের! কী করবেন? রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে সংবিধান, আইনী নৈরাজ্য ও অতীত ইতিহাস! শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতির মিথ্যাচার বনাম সাংবিধানিক সমাধান! সহায় সম্পত্তি পুণ্যের কাজে ওয়াক্ফ গঠন ও প্রাসঙ্গিকতা! শেকড়ের সন্ধানে সাঁইজির ধামেঃ লালন কি জাত সংসারে— রক্তাক্ত মাহমুদুর রহমানের কুষ্টিয়ায় আগমন বনাম দুধের মাছিদের আনাগোনা! জনপ্রশাসন, জেলা প্রশাসক ও স্যার সম্বোধন কতটা সংবিধান ও আইনসম্মত! ক্রেতা ঠকে গেলে বিক্রেতার বিরুদ্ধে যত আইনগত প্রতিকার! আইনে জামিন চর্চা বনাম বিচারকের পদত্যাগের দাবীতে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ!
আত্মপ্রকাশ ঘটল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের

আত্মপ্রকাশ ঘটল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি, ঐক্য প্রক্রিয়া, নাগরিক ঐক্য জেএসডি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ হয়েছে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এর ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক গণফোরামের সভাপতি . কামাল হোসেন

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের ডাক কোনো দলীয় স্বার্থে নয়, এটা জাতীয় স্বার্থে। কোটি কোটি জনগণের পক্ষ থেকে এই ডাক। এটা কোটি মানুষের উদ্যোগ। এই জোটে যুক্তফ্রন্টের দুই শরিক দলও আছে। আমি অন্যদেরও আশা করি এই ঐক্যে।

. কামালের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর এই জোটের নামকরণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি ১১টি লক্ষ্য পাঠ করেন তিনি

সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছেসব দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব বিতর্কিত আইন বাতিল করা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দফা :

. অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে

. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে

. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সব রাজনৈতিক দলের সভাসমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে

. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যম স্বাধীন মত প্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার গ্রেফতারদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করতে হবে

. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত করতে হবে

. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনা স্থল কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশের উপর কোনো প্রকার বিধিনিষেধ আরোপ না করা। নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে

. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত কোনো ধরনের নতুন মামলা না দেয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে

তাদের উল্লেখিত লক্ষ্যগুলো হচ্ছে :

. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষমতা নিশ্চিত করা এবং স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারক নিয়োগের নীতমালা প্রণয়ন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা

. মহান মুক্তি সংগ্রামের চেতনাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিদ্যমান স্বেচ্ছাচারী শাসনব্যবস্থা অবসান করে সুশাসন ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করা। এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক নির্বাহী ক্ষমতা অবসানের জন্য সংসদে, সরকারে, রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ, ন্যায়পাল নিয়োগ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কার্যকর করা

. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সৎ যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক কমিশন গঠন করা

. দুর্নীতি দমন কমিশনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত করা হবে। দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারিবেসরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি কঠোর হাতে দমন দুর্নীতির দায়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা

. দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারত্বের অবসান শিক্ষিত যুবসমাজের সৃজনশীলতা এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাকে একমাত্র যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করে কোটা সংস্কার করা

. সব নাগরিকের জানমালের নিয়াপত্তা মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চয়তা বিধান করা। কৃষকশ্রমিক দরিদ্র মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য পুষ্টি সরকারি অর্থায়নে সুনিশ্চিত করা। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা

. জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতি দলীয়করণের কালো থাবা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের সার্বিক স্বচ্ছতা জবাবহিদিতা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন কাঠামোগত সংস্কার সাধন

. রাষ্ট্রের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, জনগণের আর্থিক সচ্ছলতা সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা আনা, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সুষম বণ্টন জনকল্যাণমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। নিম্ন আয়ের নাগরিকদের মানবিক জীবন মান নিশ্চিত করা এবং দ্রব্যমূল্যের সাথে সংগতিপূর্ণ বেতমমজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা হয়

. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গঠন এবং প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা নেতিবাচক রাজনীতির বিপরীতে ইতিবাচক সৃজনশীল এবং কার্যকর ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা। কোন জঙ্গি গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেয়া

১০. ‘সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’—এই নীতির আলোকে জনস্বার্থ জাতীয় নিরাপত্তাকে সমুন্নত রেখে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা এবং প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে পারস্পরিক সৎ প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্ব সমতার ভিত্তিতে ব্যবসাবাণিজ্য, যোগাযোগ বিনিয়োগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার কার্যকর উদ্যোগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা

১১. বিশ্বের সব নিপীড়িত মানুষের ন্যায়সংগত অধিকার সংরামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পুনর্বাসনের কূটনীতিক তৎপরতা জোরদার এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সুরক্ষা লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি সমরসম্ভারে সুসজ্জিত, সুসংগঠিত যুগোপযোগী করা

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সভাপতি . কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডির সভাপতি আবদুর রব, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন,গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।

প্রসঙ্গত সময় সাবেক রাষ্ট্রপতি কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বা তার দল বিকল্পধারার কোনো নেতা জাতীয় প্রেস ক্লাবে উপস্থিত ছিলেন না। একই সময় বারিধারায় আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন বি চৌধুরী। ওই সংবাদ সম্মেলনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, মাহি বি চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন

 

এই সংবাদ টি সবার সাথে শেয়ার করুন




দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।  © All rights reserved © 2018 dainikinternational.com
Design & Developed BY Anamul Rasel