সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন

ঘোষনা :
  সম্পূর্ণ আইন বিষয়ক  দেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা   দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল এর  পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা   । 
আদালত চত্বরে হালিমাদের কান্না, গ্রেপ্তার ১৭০, রিমান্ডে ১০১

আদালত চত্বরে হালিমাদের কান্না, গ্রেপ্তার ১৭০, রিমান্ডে ১০১

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত চত্বরে সোনা মিয়াকে (৬০) এক নজর দেখার জন্য মঙ্গলবার দুপুর থেকে অপেক্ষা করছিলেন স্ত্রী হালিমা বেগম। শেষ পর্যন্ত সোনা মিয়ার দেখা পাননি হালিমা। কারণ সোনা মিয়াকে আদালতের হাজতখানা থেকে আদালতের এজলাসে তোলা হয়নি।

স্বামীর দেখা না পেয়ে সন্ধ্যার আগে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন হালিমা বেগম। হালিমার মতো আরও অনেক স্বজনদের আদালত চত্বরে কাঁদতে দেখা যায়। হালিমা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, তাঁর স্বামী চায়ের দোকানদার। কোনো রাজনীতির সঙ্গে তিনি জড়িত নন। কিন্তু লালবাগ এলাকায় চায়ের দোকান থেকে সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার কাগজপত্র বলছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার লালবাগ থানায় করা মামলায় সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। লালবাগ থানা-পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, ককটেল বিস্ফারণ ঘটানোর সঙ্গে এই আসামি জড়িত। আসামি বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন।

সোনা মিয়ার আইনজীবী মুরশিদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, বৃদ্ধ সোনা মিয়াকে হয়রানি করার জন্য পুরোনো এই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতকেও তিনি লিখিতভাবে সেটা বলেছেন। মুরশিদ আলম খানের অভিযোগ, পুলিশ সন্দেহজনকভাবে পুরোনো রাজনৈতিক মামলায় গণগ্রেপ্তার করছে।

আদালত ও পুলিশ সূত্র বলছে, ঢাকায় ৮৩টি মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৭০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মঙ্গলবার হাজির করে পুলিশ। এর মধ্যে ১০১ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। বাকিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে

পুলিশ সূত্র বলছে, সোমবার ঢাকা মহানগরের ৩৮টি থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব আসামিকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার আদালতে পাঠায়। মামলাগুলোর বেশির ভাগ করা হয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসে। মামলার বাদী সব পুলিশ। মামলায় ঢাকার রাস্তায় ককটেল বিস্ফারণ ঘটিয়ে নাশকতা করা, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, পুলিশকে হত্যার চেষ্টা করা, যান চলাচলে বাধা দেওয়া ও হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগ আনা হয়েছে

এসব মামলার বেশির ভাগ বিশেষ ক্ষমতা আইন, বিস্ফোরক আইন ও দণ্ডবিধি আইনে করা হয়েছে। আসামির কাঠগড়ায় বোরহানকে দেখে কাঁদছিলেন তাঁর স্ত্রী কেয়া বেগম। আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, বোরহান রাজনীতি করেন না। মুগদা এলাকায় চালের ব্যবসা করেন। সোমবার রাতে বাড়ি থেকে উঠিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার কাগজপত্রে দেখা যায়, চাল ব্যবসায়ী বোরহানসহ ৪ জনকে গত ৪ সেপ্টেম্বর করা বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। অথচ মামলার এজাহারে বোরহানের নাম নেই।

মামলায় পুলিশ বলেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত একটার দিকে মুগদার কাজী বাড়ি জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় পুলিশ সদস্যকে হত্যার উদ্দেশ্যে দুটি ককটেল বিস্ফারণ ঘটায়। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে লিখিতভাবে বলেছেন, হয়রানি করার জন্য এসব মামলায় গ্রেপ্তার করছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার কয়েক জন আসামির স্বজন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ বাসায় বাসায় রাতে রাতে অভিযান চালাচ্ছে। নিরীহ লোকদের ধরে ধরে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।’ খিলগাঁও থানার মামলায় গ্রেপ্তার নূর ইসলামের স্ত্রী ঝুমা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, তাঁর স্বামী রাজনীতি করেন না। অথচ রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার করে ফাঁসিয়ে দেওয়া হলো।

দুপুরে আদালতে গিয়ে দেখা যায়, প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের থানা থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রিজন ভ্যান আদালতের সামনে আসার পর আসামিদের দেখে অনেক স্বজন কেঁদে ফেলেন। বিকেলের পর এসব আসামিকে আবার প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত আসামিদের প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যেতে দেখা যায়

সুত্রঃ প্রথম আলো

 

এই সংবাদ টি সবার সাথে শেয়ার করুন




দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।  © All rights reserved © 2018 dainikinternational.com
Design & Developed BY Anamul Rasel