ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃ হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছেন বিচারিক আদালতে দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তা স্থগিতের বিধান নেই।চাইলে আবেদনকারী আপিল বিভাগে যেতে পারেন বলে পর্যবেক্ষণে বলেছেন আদালত।এ ব্যাপারে একটা প্রিন্সিপাল সেটেল করতে পারেন আপিল বিভাগ।হাইকোর্ট সেটা পরবর্তীতে অনুসরণ করতে পারে।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের দণ্ড স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে আজ সোমবার (২৬ নভেম্বর) এ আদেশ দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।
পরে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ বলেন, তার দণ্ড স্থগিতে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। যেটা খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। যার ফলে তার দণ্ড বহাল রয়েছে। যদি আজ তার সাজাটা স্থগিত হতো তাহলে রাজনৈতিকভাবে যারা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আছেন তারা আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারতেন। আজকের আদেশের ফলে তাদের আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগটা থাকলো না।’
‘আদালত বলেছেন, আপনারা ইচ্ছা করলে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যেতে পারেন। আপিল বিভাগ এ ব্যাপারে একটা প্রিন্সিপাল সেটেল করতে পারেন। পরবর্তীতে হাইকোর্ট সেটা অনুসরণ করতে পারে।
এই সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এর মধ্যে যাদের সুপ্ত ইচ্ছা ছিল খালেদা জিয়াসহ অন্যরা নির্বাচন অংশগ্রহণ করতে পারবেন, সেই ইচ্ছাটা আপাতত বাতিল হয়ে গেলো।
তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির এমন কোনো সেকশন নেই যেটা অনুসরণ করে সাজাটা স্থগিত করা যাবে। যার কারণে আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়ে তার আবেদন খারিজ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সাকা চৌধুরীর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের খসড়া ফাঁসের মামলার রায় দেন বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম।
রায়ে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলামকে ১০ বছর এবং ম্যানেজার মাহবুবুল হাসান, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদী হাসান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী ফারুক আহমেদ ও নয়ন আলীকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্য দুই আসামি সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী খালাস পান।
ব্যারিস্টার ফখরুলকে দশ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয়মাস এবং অন্য চারজনকে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ছয়মাস করে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়।
এ দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের পর ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এদিকে তার আপিল বিচারাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় তিনি দণ্ড স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। যেটা সোমবার খারিজ হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তবে রায়ের আগেই সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্য এবং আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা ‘রায়ের খসড়া কপি’ সাংবাদিকদের দেখান ও স্পাইরাল বাইন্ডিং করা কপি নিয়ে ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে যান।
রায় ঘোষণার পরদিন ২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় জিডি করেন, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়।
সুত্রঃ lawyersclubbangladesh.com
সম্পাদক ও প্রকাশক : এ্যাডভোকেট পি. এম. সিরাজুল ইসলাম ( সিরাজ প্রামাণিক)
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :কুষ্টিয়া আদালত চত্ত্বর, খুলনা, বাংলাদেশ।
মোবাইল : 01716-856728, ই- মেইল : seraj.pramanik@gmail.com নিউজ: dainikinternational@gmail.com