সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ গোপন ক্যামেরায় এক শিক্ষিকার ছবি ও ভিডিও ধারণ করায় এবার সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া আদালতে পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। ইতোপূর্বে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মী শিক্ষিকার দায়ের করা যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভূক্তভোগী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানা যায়। কুৎসা রটনাকারী, পর্নোগ্রাফী সৃষ্টি ও উৎপাদনকারী ওই শিক্ষকের নাম দি্যুৎ কুমার দাস। তিনি কুষ্টিয়ার খোকসা জানিপুর সরকারী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার শিক্ষক বলে জানা যায়।
মামলার ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আসামী ও বাদিনী একই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। সেই সুবাদে সুচতুর আসামী বাদিনীকে বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে ক্যামেরা ও গোপন ভিডিওর মাধ্যমে বাদিনীর অজ্ঞাতে অন্তরঙ্গ মূহুর্তে শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গসমূহের বস্ত্রহীন ভিডিও ও ছবি ধারণ করে। এরপর আসামী বাদিনীর কাছে ৫,০০,০০০/=(পাঁচ লক্ষ) টাকা দাবী করে। বাদিনী অপারগতা প্রকাশ করলে বাদিনীকে হুমকি দিয়ে বলে যে, তোর সঙ্গে আমার গোপন ক্যামেরা ও ভিডিওতে কিছু ছবি ধারণ করেছি এগুলো ইন্টারনেটে প্রকাশ করে তোকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হবে। এ বিষয়ে বাদিনী খোকসা থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করে, যার নম্বর ৬৬২, তাং-১৬/০২/২০২০। এরপর আসামীকে বাদিনী টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আসামী তার ধারণকৃত অন্তরঙ্গ মূহুর্তের স্পর্শকাতর ভিডিও ও ছবি আসামী ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট, মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্্র ডিভাইসের মাধ্যমে বাদিনীর নিজ মোবাইল, তার খোকসা নিজ এলাকা ও তার আত্মীয় স্বজনের এলাকায় উক্ত পর্ণোগ্রাফী, ফটোগ্রাফী সরবরাহ ও প্রকাশ করে। এ বিষয়ে আসামীর বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ স্কুলের প্যাডে গত ১৬ ফেব্রুয়ারী একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন যে, বিদ্যুৎ কুমার দাস, ট্রেড ইন্ট্রাক্টর (জেনারেল মেকানিক্যাল) স্বয়ং তিনি নিজে সকল শিক্ষকের অবগতির লক্ষ্যে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে ওই শিক্ষিকার ছবি ও ভিডিও দেখিয়েছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কুষ্টিয়া আদালতের আইনজীবী জাহানারা আক্তার মিলি জানান, আসামী বাদিনীর ওই অন্তরঙ্গমূহুর্তের ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্্র ডিভাইসের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে নির্লজ্জভাবে ছেড়ে দিয়ে গণউপদ্রব সৃষ্টি ও বেআইনী কার্য করে সমাজের উঠতি বয়সের তরুণদের মনে নানা রকমের বিরুপ মানসিকতা সৃষ্টি করে চলেছেন। সেইসাথে ফেসবুকে পর্নোগ্রাফী প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে বিজ্ঞাপন প্রচার করে চলেছে। ফলে আসামী পর্নোগ্রাফী সৃষ্টি ও উৎপাদন করে বাদিনীর সামাজিক মর্যাদাহানি করেছে এবং ধারণকৃত পর্নোগ্রাফীর মাধ্যমে বাদিনীকে মানসিক নির্যাতন করিয়া আসামী পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮ (১) (২) (৩), (৪) ও ৫ (খ) ধারার অপরাধ সংগঠিত করেছে।