বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ কুষ্টিয়া জেলায় এই প্রথম তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত তিনজনই পুরুষ। এদের মধ্যে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, একজন পুলিশ অপরজন ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধ শ্রমিক। আক্রান্ত ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া সূর্যসেন ক্লাবের সামনে। পুলিশের বাড়ি খোকসার ওসমানপুর গ্রামের কাজীবাড়ি। অপরজনের বাড়ি কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে। আক্রান্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল (৩০), আরেকজন পুলিশ সদস্য মৃত কাজী আলতাফ হোসেনর পুত্র কাজী আতাউর রহমান এবং অপরজন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে আক্কাস আলী (৬৯)।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম এদের করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আক্রান্ত মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল (৩০) মাদারীপুর জেলায় সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অফিসার পদে কর্মরত আছেন। গত ২৫ মার্চ তিনি মাদারীপুর থেকে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে আসেন। এর পর থেকে তিনি কুষ্টিয়াস্থ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অপরজন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের আক্কাস আলী (৬৯) তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছেড়ে অন্য কোন জেলায় জাননি বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অন্যজন পুলিশ সদস্য ঢাকা থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে নিজ বাড়িতে পালিয়ে এসেছিল।
গত কদিন ধরে ব্যাংক কর্মকর্তা ও বৃদ্ধের জ¦র, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় গত ২০ এপ্রিল বিকেলে দুজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরের দিন ২১ এপ্রিল সকালে পরীক্ষার জন্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাবে পাঠানো হয়। আজ বুধবার সকালে যশোর থেকে এই দুজনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এলাকাবাসী জানায়, আক্কাস আলী স্থানীয়ভাবে তৈরী ছোট মেশিন দিয়ে বাড়ি বাড়ি ধান মাড়াই এর কাজ করেন। অনেক আগে থেকেই তার এ্যাজমার সমস্যা রয়েছে। সিভিল সার্জন ডাঃ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আক্রান্ত দুজন এতদিন বাড়িতে ছিলেন। পজেটিভ রেজাল্ট আসার পর তাদের দুজনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য টিম পাঠানো হয়েছে। আক্রান্ত দুজনের বাড়িসহ সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আশে পাশের কয়েকটি বাড়ি এমনকি উক্ত এলাকাও লক ডাউন করা হতে পারে বলে উল্লেখ করে সিভিল সার্জন জানান, কুষ্টিয়া জেলায় এটাই প্রথম করোনাভাইরাস সনাক্ত হলো। এজন্য কুষ্টিয়া জেলায় ৩৩৯ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৫ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। বাকিদের রিপোর্ট আসার অপেক্ষায় আছে।
যবিপ্রবি জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক ও অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, মঙ্গলবার পঞ্চমদিনে যশোরসহ ছয়টি জেলা থেকে মোট ৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য হাতে পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব কর্তৃপক্ষ। ৬৯ জনের মধ্যে যশোর জেলার ২০টি, নড়াইল জেলার আটটি, মাগুরা জেলার ১০টি, ঝিনাইদহ জেলার ছয়টি, মেহেরপুর জেলার ১৩টি এবং কুষ্টিয়া জেলার ১২টি নমুনা হাতে পেয়ে পরীক্ষার কাজ শুরু হয়।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে পঞ্চমদিনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জন পজিটিভ হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নড়াইলে পাঁচজন। এদের মধ্যে চারজন চিকিৎসক। এছাড়া যশোরে চারজন, কুষ্টিয়ায় দুজন, মাগুরা ও নড়াইলে একজন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।