ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: কুষ্টিয়ায় করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে গত দুই মাসে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন নারী ও ৯ জন পুরুষ। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১ জন, কুমারখালীতে ৩, ভেড়ামারায় ৩, দৌলতপুরে ২ ও মিরপুর উপজেলায় ২ জন রয়েছেন। এছাড়া জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আর রবিবার পর্যন্ত জেলায় করোনা রোগী রয়েছেন ২২৪ জন।
জানা যায়, জেলায় সর্বপ্রথম করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ৩০ মার্চ সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান শহরের চৌড়হাস এলাকার এক ইজিবাইক চালক। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওই দিন দুপুরে ভেড়ামারার ফারাকপুর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মৃত ওই ব্যক্তির গ্রামের বাড়ি ভেড়ামারা পৌরসভার নওদাপাড়া এলাকায়। গত ০২ এপ্রিল শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে সালেহীন (৩৪) নামে নৌ-বাহিনীর এক সদস্যের মৃত্যু হয়। সালেহীন খুলনা নৌ-ইয়ার্ডে কর্মরত ছিলেন।
১০ এপ্রিল বিকেল ৩টায় নিজ বাড়িতে জ্বর-শর্দি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মৃত্তিকাপাড়ার আশরাফুল ইসলাম (৪৫)। এরপর ১২ এপ্রিল করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি থাকা ময়না খাতুন (৪৩) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়। যদিও মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় তার নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়।
১৫ এপ্রিল জ্বর-বোমি ও করোনা উপসর্গ নিয়ে দৌলতপুর উপজেলার শাওন (০৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়। শাওন দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর গ্রামের জুয়েল প্রামানিকের ছেলে। টানা দশদিন আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকার পরে করোনা উপসর্গ নিয়ে ১৫ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যায় শিল্পী খাতুন (২৮) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাকে শহরের কোর্ট স্টেশন চত্বর থেকে নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ১৯ এপ্রিল সকালে করোনা উপসর্গ নিয়ে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ ২৯ মে সকাল ৮টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর গোরস্থান পাড়ায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৬৫ বছর বয়সী এক অবসরপ্রাপ্ত নার্সের মৃত্যু হয়। তিনি ঢাকায় থাকতেন। ওই নার্সের মৃত্যুর পর তার ছেলের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক বিবেচনায় নেয়া হয় না। তারপরও কেবলমাত্র স্থানীয়ভাবে এসব সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার কারণে তারা মৃত ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে থাকেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের বিষয়ে তাদের কাছে তেমন কোনো তথ্য নেই বলেও তিনি জানান।
এদিকে জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একশ এক বছর বয়সী বৃদ্ধ কুমারখালী উপজেলার শেরকান্দি এলাকার মোকাদ্দেস হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা এটিই প্রথম। মঙ্গলবার করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এক দিন পর বুধবার পরীক্ষার রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ আসে।
জেলায় রবিবার পর্যন্ত ২২৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী কুষ্টিয়া সদরে ৯৫ জন। এছাড়া ভেড়ামারায় ৩৫ জন, দৌলতপুরে ৩১, কুমারখালীতে ৩০, মিরপুরে ২০ ও খোকসা উপজেলাতে ১৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪২ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১৭৪ জন।
সিভিল সার্জন জানান, গত ২২ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই করোনা শনাক্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : এ্যাডভোকেট পি. এম. সিরাজুল ইসলাম ( সিরাজ প্রামাণিক)
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :কুষ্টিয়া আদালত চত্ত্বর, খুলনা, বাংলাদেশ।
মোবাইল : 01716-856728, ই- মেইল : seraj.pramanik@gmail.com নিউজ: dainikinternational@gmail.com