এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিকঃ কেউ যদি আপনার মালামাল আটক রাখে কিংবা জাল দলিল করে, বায়নাপত্র নকল করে, ষ্ট্যাম্পে জাল স্বাক্ষর করে কিংবা জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় বা নকল করা যন্ত্রপাতি, সীল মোহর, মুদ্রা, টিকিট, অশ্লীল ছবি বা চিত্র উদ্ধারের প্রয়োজন হয় কিংবা শিশু বাচ্চাকে আটকে রাখে, তাহলে আপনি ফৌজদারী কার্যবিধির ৯৮ ও ক্ষেত্রমতে ১০০ ধারানুসারে তল্লাসী পরোয়ানা জারি করে এসব মালামাল উদ্ধার করতে পারেন। তবে এ মামলাটি করতে হবে জেলার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে। ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, বিষয়গুলি কারও নিকট মজুদ আছে কিংবা কেউ আটকে রেখেছে, তাহলে তিনি ফৌজদারী কার্যবিধির ৯৮ ও ক্ষেত্রমতে ১০০ ধারানুসারে তল্লাশী পরোয়ানা জারি করে তা উদ্ধারের আদেশ দিতে পারেন। তবে কাউকে না কাউকে অবশ্যই ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে পিটিশন আবেদন দিতে হবে।
ধরুণ, আলম সাহেব তার ব্যবসায়ী পার্টনার রহিম সাহেবকে আটক করো জোর পূর্বক তিনশত টাকার নন জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। আলম সাহেব উক্ত ষ্ট্যাম্পের উপর যে কোন ধরনের দাবী-দাওয়া লিখে নিয়ে রহিম সাহেবকে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এক্ষেত্রে রহিম সাহেব নিজের ক্ষতি হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য উই ষ্ট্যাম্প উদ্ধারে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করে বস্তুটি উদ্ধার করতে পারে।
এবার জেনে নেয়া যাক শিশু সন্তান উদ্ধার বিষয়ে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হলে কিংবা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাক হলে সন্তানের হেফাজত নিয়ে নানা বিরোধ দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে ৭ বছরের কম বয়সী শিশু সন্তান যদি বাবার হেফাজতে থাকে তাহলে মা ওই বাচ্চা উদ্ধারের দাবিতে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০০ ধারার বিধান মতে পিটিশন ফাইল করে বাচ্চা উদ্ধার করতে পারে।
তবে কাউকে উদ্ধারের জন্য ফৌজদারী কার্যবিধির ১০০ ধারার অধীনে সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে হলে প্রথমেই দেখতে হবে ওই ব্যক্তি অন্যায় করেছেন কি-না। ফৌজদারী কার্যবিধির ১০০ ধারা তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন প্রতিপক্ষের অধীনে শিশুর তত্ত্বাবধান থাকাটা অবৈধ হয়।
তবে মনে রাখবেন বাংলাদেশে পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫-এর ৫ ধারা মতে সন্তানের কাস্টডির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একচ্ছত্র এখতিয়ার পারিবারিক আদালতের। আর কাস্টডি প্রদানের ক্ষেত্রে আদালত নাবালক-নাবালিকার কল্যাণ বিষয়টিই বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এছাড়া নাবালক-নাবালিকার কোনো বুদ্ধিদীপ্ত মতামত থাকলে আদালত সেই মতামতকে প্রাধান্য দেবেন।
লেখক: বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা ও সম্পাদক-প্রকাশক ‘দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল’। Email:seraj.pramanik@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১৬-৮৫৬৭২৮
সম্পাদক ও প্রকাশক : এ্যাডভোকেট পি. এম. সিরাজুল ইসলাম ( সিরাজ প্রামাণিক)
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :কুষ্টিয়া আদালত চত্ত্বর, খুলনা, বাংলাদেশ।
মোবাইল : 01716-856728, ই- মেইল : seraj.pramanik@gmail.com নিউজ: dainikinternational@gmail.com