শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন
কর্মরত একজন ডিসির (জেলা প্রশাসক) বিরুদ্ধে প্রেম নিবেদন ও অশালীন আচরণে সংসার ভাঙার অভিযোগ এনেছেন তারই সহকর্মী নারী কর্মকর্তা (এডিসি)।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা সুরক্ষার কথা চিন্তা করে বিষয়টি চেপে রাখলেও শেষমেশ ডিসির বিচার দাবি করে জনপ্রশাসন সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই নারী কর্মকর্তা। পরে এডিসির বিরুদ্ধেও ডিসি পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্র জানায়, ডিসি এবং এডিসির পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্ট দেয়ার জন্য ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নিরঞ্জন দেবনাথকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা না হওয়ার কারণে এ প্রতিবেদনে অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম ও বিস্তারিত পরিচয় উল্লেখ করা হল না।
গত ৪ মার্চ ডিসির বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লেখা আবেদনপত্রের এক স্থানে উপসচিব পদমর্যাদার ওই নারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘…বিভিন্ন সময়ে প্রেম নিবেদন করেন এবং নিজের কষ্টকর দাম্পত্যজীবনের জন্য সহানুভূতি প্রার্থনা করেন তিনি।
অনলাইনে, প্রকাশ্যে, জনসম্মুখে একাধিকবার আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেন। ওনাকে সতর্ক করা সত্ত্বেও উনি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে ব্যক্তিগত শালীনতাবোধ অতিক্রম করেন। দায়িত্বশীল আচরণ করতে বলা হলে উনি ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক নিুস্বাক্ষরকারীকে অন্যায় এবং মিথ্যা শোকজ করেন এবং হুমকি-ধমকি দেয়ায় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হই।
অবমাননাকর পরিস্থিতিতে আমার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তার (ডিসি) অমানবিক এবং অসামাজিক আচরণের কারণে আমার জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’
এর দু’দিন আগে এ বিষয়ে বিচার প্রার্থনা করে তিনি (নারী কর্মকর্তা) ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি উল্লিখিত বর্ণনার পাশাপাশি এক স্থানে বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপপ্রাপ্ত হয়েও উচ্চশিক্ষা গ্রহণে অপরাগ হই। অবমাননাকর পরিস্থিতিতে আমার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তী সময়ে তিনি সামাজিকভাবে এ সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো সুরাহা না করে টালবাহানা করছেন।’
ওই নারী কর্মকর্তা বলেন, জুনিয়র অফিসার কেন, কোনো কর্মকর্তাই কখনও এ ধরনের শব্দ উচ্চারণ করতে পারেন না। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমি তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা এডিসি হয়েও যদি তাকে (ডিসি) গালিগালাজ করে থাকি, তাহলে প্রশ্ন হল- কোন পর্যায়ে গেলে ডিসিকে তার এডিসি এ ধরনের কথা বলতে পারেন(?)-সেটি আগে বিবেচনায় নিতে হবে।
পরবর্তীতে গত ১৫ মার্চ ডিসি অভিযোগকারী নারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর লিখিত দেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) নিরঞ্জন দেবনাথ বলেন, বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে আছে। এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। ভিকটিম সাক্ষী হিসেবে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম-পরিচয় উল্লেখ করেছেন। করোনার কারণে তাদের সাক্ষ্য নিতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। এ সপ্তাহের মধ্যে তাদের বক্তব্য নেয়া হবে।
সূত্রঃ পূর্ব-পশ্চিম বিডি ডট নিউজ