শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন
এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক:
আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানকে জমি দান করতে চান, পরকালের জন্য কিছু করতে চান তাহলে সরাসরি প্রতিষ্ঠানের বরাবরে দলিল করে দিন। কিন্তু কিভাবে প্রতিষ্ঠানের নামে জমি দান করবেন, রেজিষ্ট্রির নিয়মাবলী কি, এর জন্য কত টাকা খরচ হবে, প্রতিষ্ঠানের কার অনুকুলে জমি রেজিস্ট্রি করতে হয় এসকল বিষয় জানা অতীব জরুরী।
কোনো প্রতিষ্ঠানকে জমি দান করতে হলে কোন ব্যক্তির নাম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে দলিল করা যাবে না। তবে কোনও কোম্পানির ক্ষেত্রে তার চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিংবা কোম্পানির পক্ষে অন্য কোনো পদস্থ ব্যাক্তিকে প্রস্তাবিত জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে দাতা গ্রহীতা হতে পারেন। আপনি যদি কোনো স্কুল কলেজ, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসার নামে জমি দান করতে চান সেক্ষেত্রে দলিল করতে হবে উক্ত প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক বা প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা ভাইন চেয়ারম্যানের অনুকুলে।
যেমন হাইস্কুল, মাদ্রাসা কিংবা কলেজের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক/ প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা ভাইস-চেয়ারম্যানের অনুকূলে দলিল সম্পাদন করতে হবে। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে জমির দলিল করতে হবে “মহাপরিচালক প্রাথমিক ও গনশিক্ষা অধিদপ্তর,বাংলাদেশ, ঢাকা অথবা “সচিব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকার অনুকূলে।
এবার জেনে নিই জীবন স্বত্ত্বে দান দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি সম্পর্কে। স্ট্যাম্প এ্যাক্ট ১৯০৮ এর ৫৮ নং আর্টিক্যাল অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান (মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান) এর জন্য জীবন স্বত্ত্বে দানের বিধান হচ্ছে, যে প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পত্তি দান করা হবে সে প্রতিষ্ঠান ওই সম্পত্তি শুধু ভোগ-দখল করতে পারবে, সম্পত্তি কোনরূপ হস্তান্তর করতে পারবে না। এরূপ জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে হবে দানকারীর নামে। কোন কারণে ওই প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর না থাকলে সম্পত্তি দানকারীর মালিকানায় চলে যাবে এবং দান দলিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। এ জাতীয় দলিল রেজিস্ট্রির জন্য স্ট্যাম্প ফি দিতে হবে ২%, রেজিস্ট্রেশন ফি ২.৫%, সেই সাথে ই ফি প্রযোজ্য।
লেখকঃ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা ও আইন গবেষক। ঊসধরষ: seraj.pramanik@gmail.com, মোবাইলঃ ০১৭১৬৮৫৬৭২৮