বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন
এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক:
জমি-জমা এবং দেওয়ানী মামলা একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যখন কোন ব্যক্তির সম্পত্তির বৈধ অধিকারের উপর আঘাত আসে তখন সে তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়ানী মামলা করে। জমির স্বত্ব, দখল, অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠলে দেওয়ানী মামলার সূত্রপাত ঘটে। সময়মত রেজিস্ট্রেশন, মিউটেশন, খাজনা, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করা, বেনামী লেনদেন এবং সিলিং অতিক্রান্ত জমি নিজের দখলে রাখার কারণেও মামলা-মোকদ্দমার উদ্ভব হয়। আর দেওয়ানী মামলা হচ্ছে সম্পত্তির উপর স্বত্ব এবং দখলের অধিকার নিয়ে অংশীদার বা অন্য কোন ব্যক্তির মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে সেই বিরোধের বিষয়ে যে মামলা হয়, তাকে দেওয়ানী মামলা বলা হয়। এই বিরোধ নিরসনের দায়িত্ব দেওয়ানী আদালতের উপর ন্যস্ত থাকে। সম্পত্তি স্থাবর, অস্থাবর, দৃশ্যমান, অদৃশ্যমান, যৌথ ও একক হতে পারে।
কোন পদের অধিকার বা মর্যাদার অধিকারকেও দেওয়ানী বিষয় বলে। পিতা-পুত্রের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয় নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে তা নিয়ে দেওয়ানী আদালতে মামলা হতে পারে। পূজা বা প্রার্থনার অধিকার, মসজিদে নামাজ পড়ার অধিকার, রাস্তা দিয়ে ধর্মীয় মিছিল পরিচালনা করার অধিকার নিয়ে দেওয়ানী মামলা করা যেতে পারে। সাধারণভাবে সকল প্রকার স্বত্ব, অধিকার, দাবী প্রভৃতি মামলার বিচার দেওয়ানী আদালত করতে পারে। আর মামলায় ডিক্রী লাভ করার জন্য বাদীকে এরূপ প্রমাণ করতে হয় যে, উক্ত মামলা দায়ের করার ব্যাপারে তার বৈধ অধিকার রয়েছে। বাদী তার অধিকার প্রমাণ করে ডিক্রী লাভের যে সকল অবস্থা ও তথ্য আদালতের সামনে উপস্থাপন করে, তাকেই দেওয়ানী আইনে কজ অব একশন বা মামলার কারণ বলা হয়ে থাকে।
দেওয়ানী আদালতে যে পক্ষ মামলা দায়ের করে, তাকে মামলার বাদী বলা হয় এবং যার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে বিবাদী বলা হয়। দেওয়ানী মামলায় এক ব্যক্তি বাদী হতে পারে বা একাধিক ব্যক্তি যৌথভাবে বাদীরূপে মামলা পরিচালনা করতে পারে। একইভাবে এক বা একাধিক ব্যক্তি কোন মামলার বিবাদী হতে পারে। দেওয়ানি মামলা শুরু হয় আরজি গ্রহণের মাধ্যমে। বাদী তার মোকদ্দমার বর্ণনা ও প্রতিকার আরজিতে উল্লেখপূর্বক প্রয়োজনীয় কোর্ট ফিসহ সংশ্লিষ্ট আদালতে মোকদ্দমাটি দায়ের করবেন।
লেখকঃ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। মোবাইলঃ ০১৭১৬৮৫৬৭২৮