সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন
ভারতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় ফাঁসির চেয়ে কম বেদনায়ক এবং সামাজিকভাবে আরো গ্রহণযোগ্য উপায় অনুসন্ধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিকল্প চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড় ও বিচারপতি পি এস নরসিমহার একটি বেঞ্চ বলেছেন, ‘আরো ভালো বিকল্প যাচাই শেষে মৃত্যুদণ্ডের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করা সম্ভব হবে। তার জন্য দণ্ডিত ব্যক্তির ব্যথা বা কষ্ট বিচারে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুর প্রভাব হিসাব করে তথ্য সংগ্রহ করার নির্দেশ দিচ্ছি। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মানবমর্যাদার সঙ্গে সামাঞ্জস্যপূর্ণ মৃত্যুদণ্ডের বিকল্প কোনো পদ্ধতি আছে কি না আর তা বিশ্বের কোথাও বিদ্যমান কি না তার তথ্যও সংগ্রহ করতে হবে।’
অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে আদালত জানান, বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সময় আমাদের হাতে অবশ্যই কিছু তথ্য থাকতে হবে। আপনি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আদালতে আসতে পারেন এবং আমরা একটি নির্দেশনা দিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে পারি। পুনর্বিবেচনা নিয়ে আমরা আপনার মূল্যায়ন শুনতে পারি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যদিও আদালত আইনসভাকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করতে বলতে পারেন না, তবে এটি পুনর্বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে পারেন।’
আইনজীবী ঋষি মালহোত্রা ২০১৭ সালে জনস্বার্থে একটি পিআইএল দাখিল করেছিলেন, যেখানে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকার করার বর্তমান প্রথা বাতিল করে শিরায় প্রাণঘাতী ইনজেকশন, গুলি, ইলেকট্রোকশন বা গ্যাস চেম্বারের মতো কম বেদনাদায়ক পদ্ধতি দিয়ে প্রতিস্থাপন করার আবেদন জানান তিনি। কারণ হিসেবে আইনজীবী মালহোত্রা উল্লেখ করেন, ফাঁসি দেওয়ার মাধ্যমে ব্যক্তির মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। এ ছাড়া ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যু মানবিকও নয়।
বেঞ্চ তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, মর্যাদা বা ব্যথার চেয়ে বড় প্রশ্ন বিজ্ঞান কী বিকল্প দিচ্ছে। প্রাণঘাতী ইনজেনকশন? উত্তর হলো ‘না’। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও প্রাণঘাতী ইনজেকশনকে বিকল্প হিসেবে ধরা হয়নি।
বেঞ্চ বলেন, ‘প্রাণঘাতী ইনজেকশনও বেদনাদায়ক মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এটি মানবিকও হয় না।’ এর পরও সুপ্রিম কোর্টের এই বেঞ্চ বিকল্প অনুসন্ধানে কেন্দ্রীয় সরকারকে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন।
সূত্র : দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস