মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৮ অপরাহ্ন

ঘোষনা :
  সম্পূর্ণ আইন বিষয়ক  দেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা   দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল এর  পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা   । 
সংবাদ শিরোনাম :
শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতির মিথ্যাচার বনাম সাংবিধানিক সমাধান! সহায় সম্পত্তি পুণ্যের কাজে ওয়াক্ফ গঠন ও প্রাসঙ্গিকতা! শেকড়ের সন্ধানে সাঁইজির ধামেঃ লালন কি জাত সংসারে— রক্তাক্ত মাহমুদুর রহমানের কুষ্টিয়ায় আগমন বনাম দুধের মাছিদের আনাগোনা! জনপ্রশাসন, জেলা প্রশাসক ও স্যার সম্বোধন কতটা সংবিধান ও আইনসম্মত! ক্রেতা ঠকে গেলে বিক্রেতার বিরুদ্ধে যত আইনগত প্রতিকার! আইনে জামিন চর্চা বনাম বিচারকের পদত্যাগের দাবীতে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ! নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের থেকেই ভিসি নিয়োগের অনুরোধ ইবি শিক্ষকদের সংবিধান সংস্কারঃ সংশোধন না-কি পুনর্লিখন?  সেনাবাহিনীর বিচারিক ক্ষমতাঃ আইন কি বলে?
ব্যাংক কর্মকর্তা কর্তৃক ইবি শিক্ষককে মারধর, লিখিত অভিযোগ

ব্যাংক কর্মকর্তা কর্তৃক ইবি শিক্ষককে মারধর, লিখিত অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমানের উপর অতর্কিত হামলা ও উপুর্যুপরি মারধরের অভিযোগ উঠেছে সোহেল মাহমুদ নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সকালে কুষ্টিয়া হাউজিং আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত সোহেল মাহমুদ অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের কুষ্টিয়া জেলার চৌড়হাস শাখার কর্মকর্তা। ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত উভয়েই কুষ্টিয়া শহরের হাউজিংয়ের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, শিক্ষক সমিতি ও রেজিস্ট্রার বরবার পৃথক তিনটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।

অভিযোগ পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী, ২০২১ সাল থেকে পরিবারসহ হাউজিং ডি-৪৭০ নং বাসায় ভাড়ায় অবস্থান করছি। প্রতিদিনের মতো অদ্য ভোর ৫:৫০ মিনিটে বাসার পাশে হাউজিং ডি-ব্লক এবং সি-ব্লকের মাঝামাঝি রাস্তায় হাটছিলাম। এমতাবস্থায় সি ব্লকের কুষ্টিয়া কৃষি কলেজের সামনে আসা মাত্রই হাউজিং ডি- ব্লকের ১৬৭ নং প্লটের বাসিন্দা সোহেল মাহমুদ, পিতা: নায়েব আলী বিশ্বাস, গ্রাম: সদরপুর, কুমারখালী, কুষ্টিয়া (প্রিন্সিপাল অফিসার অগ্রণী ব্যাংক, চৌড়হাস শাখা, কুষ্টিয়া) আমাকে দেখা মাত্রই আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং শারীরিকভাবে আঘাত করে। সেখান থেকে আমি কোন রকম নিজেকে রক্ষা করে আমার সহকর্মী অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান ও অধ্যাপক ড. আব্দুল বারীকে ফোন করি। তারা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদকে জানায়। তিনি সহকারী প্রক্টর ড. হুমায়ূন শাহেদকে আমার কাছে পাঠালে তাঁর সহযোগীতায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হই। কর্তব্যরত ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং পরবর্তী ব্যবস্থাপত্র দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে আমি ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে বাসায় চিকিৎসাধীন আছি।

অভিযোগ পত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, হামলাকারী ব্যক্তি আমাদের পাঁচজন শিক্ষকের নির্মাণাধীন বিল্ডিং এর প্রতিবেশী। ইতিপূর্বে বিগত ০৭/০৬/২০২২ ইং তারিখ আনুমানিক বিকেল ৬.৪৫ মিনিটে আমি ও অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী উক্ত সন্ত্রাসীর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলাম। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে বিগত ০৮/০৬/২০১২ ইং তারিখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করি। এছাড়াও আমাকে ফোনে একাধিকবার এবং অধ্যাপক ড. মহিব্বুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। এমতাবস্থায় আমি আমার পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

ভুক্তভোগী শিক্ষক ও তার সহকর্মীরা জানান, প্রতিদিনের মতো বুধবার সকালে হাঁটতে বের হয়ে আবাসিক এলাকার হাউজিং ডি ব্লকের সামনে এলে ভুক্তভোগী শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলা করেন প্রতিবেশী ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষকে উপুর্যুপরি মারধর করেন অভিযুক্ত সোহেল। এতে ড. মোস্তাফিজের বাম হাতের আঙুলে গুরুত্বর আঘাত পান। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ সময় পরিবারসহ শহর ছাড়তে এবং না হলে প্রাণ-নাশের হুমকির অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। পরে ওই শিক্ষকের সহকর্মীরা তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাড়ি নির্মাণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সে দীর্ঘদিন ধরে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। সকালে হাঁটতে বের হলে আগে থেকেই লুকিয়ে থেকে আমাকে একা পেয়ে মারধর করেন। আমি তখনই বিষয়টি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও প্রক্টরিয়াল বডিকে জানিয়েছি। এরআগেও সে আমাদের অন্য সহকর্মীদেরকে হেনস্তা করেছে। তখন বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়।

কুষ্টিয়া শহরে বসবাসরত শিক্ষকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, বাড়ি নির্মাণ নিয়ে অনেক দিন ধরেই ড. মোস্তাফিজসহ কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে বিরোধ চলছিল ওই ব্যাংক কর্মকর্তার। শিক্ষকরা বাড়ি নির্মাণ শুরু করলে বাধা দেন তিনি। পরে কুষ্টিয়া পৌরসভায় অভিযোগ করলে সার্ভেয়ার এসে বিষয়টির মীমাংসা করে দেন। কিন্তু কাজ শুরু করলে আবারো তিনি শিক্ষকদের হুমকি দিতে থাকেন। গত বছরের জুলাই মাসে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল বারিকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে সোহেলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার অধ্যাপক। ভুক্তভোগী শিক্ষক বিষয়টি ব্যাংকের এক সিনিয়র কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তার প্রতি ক্ষুব্ধ হন অভিযুক্ত সোহেল।

আইন বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক আইন প্রশাসক ড. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষকরা মিলে পূর্বে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। এরপরে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আমি মনে করি, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকের ওপর হামলা।’

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘তার সাথে আমার বিরোধ ছিল। তিনি আমার অফিসের ডিজিএমের কাছে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন। কিন্তু আমি মারধরের সাথে জড়িত নই। তিনি আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এটি ভিত্তিহীন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শাহেদ আহমেদ বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর হাসপাতালে ভুক্তভোগী শিক্ষকের সাথে দেখা করেছি। তিনি আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে চাইলে আমরা তাকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করবে।’

এই সংবাদ টি সবার সাথে শেয়ার করুন




দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।  © All rights reserved © 2018 dainikinternational.com
Design & Developed BY Anamul Rasel