শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন

ঘোষনা :
  সম্পূর্ণ আইন বিষয়ক  দেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা   দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল এর  পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা   । 
সংবাদ শিরোনাম :
বিবাহিত কন্যা পিতার ভিটাবাড়ির অংশের কেন ভাগ পাবেন না?

বিবাহিত কন্যা পিতার ভিটাবাড়ির অংশের কেন ভাগ পাবেন না?

 

এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক:
যে সকল নারী স্বামীর বাড়ি বসবাসের গৃহ থাকা স্বত্বেও বাবার গৃহ (ভিটে বাড়ি) থেকেও ভাগের অংশ চাচ্ছেন, তাদের জন্য এ লেখাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইন বলছে, একজন উত্তরাধিকারিনী বোন পৈত্রিক ভিটায় অবস্থিত কোন বসতগৃহ বা কুটিরে বিবাহ পযর্ন্ত সহ-অংশীদার হিসেবে বিবেচ্য হবেন। পরবর্তীতে উত্তরাধিকারিনীর অর্থাৎ বোনের অন্যত্র বিবাহ হলে, তিনি আগন্তুক/বাইরের মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবেন। তাই তিনি উক্ত পৈত্রিক ভিটায় অবস্থিত বসতগৃহ বা কুটিরের কোন একচ্ছত্র অংশ দাবী করতে পারবেন না। একারনেই বাটোয়ারা মামলায় উত্তরাধিকারিনীর বসতগৃহ বা কুটিরের অংশ বিশেষ প্রাপ্তির বিষয়টি বিবেচিত হয় না। উক্ত সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী পূত্র সন্তান গণের মধ্যে বিবাদ বা বিরোধ বৃদ্ধি পাবে বলে উচ্চ আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। (১৩ ডি.এল.আর ২৩০)।

সাধারণত বোনেরা পৈতৃক সম্পত্তির সব জায়গা জমিরই ২:১ অনুপাতে অংশীদার। যেহেতু মেয়েদের ঠিকানা হয় শশুর বাড়ি তাই বাপের বাড়ির গৃহের অংশ তাদের ব্যবহার করার দরকার পড়েনা। এছাড়াও একটা পর্যায় বোনেরা বাপের বাড়ির জমি পেলেই জমি অন্যের কাছে বেঁচে চলে যায়। অন্যদিকে ছেলেদের বাপের গৃহই সম্বল তাই সামাজিক আর পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় পিতৃগৃহের বা ভিটে বাড়ির জমির ভাগ দেয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। বোনেদের পিতার ভিটে থেকে জমি নিতেই হবে এটা অমানবিক দাবী। কোন মেয়ে যদি এইসব বুঝেও বাবার গৃহ বা বসতবাড়ি থেকেই জমি নিতেই হবে অন্য জায়গায় নেবো না এমন আচরন করে তাহলে বুঝতে হবে সে তার ভাইকে কষ্ট দেয়ার জন্য অথবা অতিরিক্ত লোভের বশবর্তী হয়েই এইসব ঝামেলা করতে চাচ্ছে। ভাইদের বাবার গৃহটাই যখন শেষ সম্বল তখন এই দিকে নজর না দেওয়াই ভালো।

মেয়ের বিবাহ হলে মেয়ে যদি স্বামীর বাড়িতে বসবাস করে, তাহলে বাটোয়ারা আইনের ৪ ধারা মতে পৈত্রিক বাড়ি বাটোয়ারা করতে পারবে না। কারণ, সে একই পরিবারভূক্ত নয়। (৩৪ ডিএলআর ২৪৫)। ভাইদেরও উচিত সমানুপাতিকভাবে অর্থাৎ যাতে বোনের হক কোনো ভাবেই বিনষ্ট না হয় এমন জমি থেকে তার অংশ বুঝিয়ে দেওয়া। কিন্তু বোন যদি অবিবাহিত/বিধবা/তালাকপ্রাপ্তা হয়ে থাকে তবে বাবার বসত বাড়ির অংশ দাবী করলে তাকে অবশ্যই দিতে হবে।

বঞ্চিত বোনেরা বাঁটোয়ারা বা বণ্টনের মোকদ্দমা করতে পারেন। মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তির ভাগ-বণ্টন নিয়ে উত্তরাধিকারীদের নিজেদের মধ্যে বনিবনা না হলে- বাঁটোয়ারা মামলা করে অধিকার ফিরে পাওয়া যায়। এই মোকদ্দমা চলাকালে কেউ মারা গেলে তাঁদের উত্তরাধিকারীরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন এবং অংশ চাইতে পারেন। অর্থাৎ শুধু বোনেরা নন, বোনেরা মারা যাওয়ার পর তাঁর উত্তরাধিকারীরাও এই মামলায় পক্ষ হতে পারেন।

লেখক: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, গবেষক ও আইনগ্রন্থ প্রণেতা। Email:seraj.pramanik@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১৬-৮৫৬৭২৮

বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখতে পারেন

এই সংবাদ টি সবার সাথে শেয়ার করুন




দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।  © All rights reserved © 2018 dainikinternational.com
Design & Developed BY Anamul Rasel