শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক:
একসময় শ্লোগান ছিল ‘‘ সাংবাদিকরা নির্লজ্জ দালালী ছাড়ুন আর দলকানা দালালরা সাংবাদিকতা ছাড়ুন’’। আওয়ামী লীগ শাসনামলে সুবিধাভোগী দালাল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে। কেউ পালাতে গিয়ে বিমান বন্দর কিংবা ভারত সীমান্তে আটক হয়েছে। অন্য দালালেরা জীবন যৌবন ও সম্পদ বাঁচাতে গা ঢাকা দিয়েছে।
স্বৈরাচার হাসিনার দালাল সাংবাদিকদের তালিকা তৈরী হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ
ছাত্র-জনতার রক্ত ঝরানোর ইন্ধনদাতা দালাল সাংবাদিকদের বিচার দাবী করেছেন।
আজ ১২ রবিউল আওয়াল। প্রিয় নবী হয়রত মোহাম্মদ (সা.) এর জন্মদিন। কিছু জীবনধর্মী আলোচনা দিয়ে নিবন্ধের ইতি টানতে চলেছি।
যার যা প্রাপ্য তাকে সেই প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার নাম জুলুম। কারো অধিকার হরণ, বিনা অপরাধে নির্যাতন, আর্থিক, দৈহিক ও মর্যাদার ক্ষতিসাধন, মানহানিকর অপবাদ দেওয়া, দুর্বলের উপর নৃশংসতা চালানো, নির্যাতন করা, অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ হরণ, অশ্লীল ভাষায় গালাগাল, উৎপীড়ন বা যন্ত্রণা ইত্যাদি কাজ জুলুমের অন্তর্ভুক্ত।
যারা জুলুম করে এমন কাউকে মহান আল্লাহ অতীতে ছেড়ে দেননি। তার শেকড় যতই শক্ত হোক। ফেরাউন ও নমরুদ তাদের শক্তির দাম্ভিকতায় নিজেদের রব বলে দাবি করেছে। স্বীয় ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য এবং তার পথের কাঁটা সরিয়ে দেওয়ার জন্য দেশের সব নবজাতক ছেলেসন্তানদের হত্যা করেছে। তারা নিজেদেরকে সর্ব ক্ষমতার অধিকারী ভেবেছিল। ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিল। জুলুম করেছিল। কিন্তু এতকিছুর পরও তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। বিশ্ববাসীর জন্য আল্লাহ তাদেরকে দৃষ্টান্ত স্বরূপ পেশ করেছেন। যাতে পরবর্তীগণ তা থেকে শিক্ষা লাভ করতে পারে।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যমের কর্মযজ্ঞ একটি আমানত, যা সৎ সাংবাদিককে প্রমাণ করতে হয় প্রতিদিন। জনগণের কাছে নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখতে যোগ্যতা ও ন্যায়নিষ্ঠতার বিকল্প এখনো বের হয়নি।
আজকের পৃথিবীতে সমাজের স্বার্থে আমাদের সাংবাদিকতার ধারায় পরিবর্তন আনা জরুরি। আর যেনো ফারজানা, শাকিল, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবুদের মতো দালাল সাংবাদিকদের জন্ম না হয়। স্পন্দনশীল গণমাধ্যম ছাড়া গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে গড়া অসম্ভব। সাংবাদিকতাও টেকসই হতে পারে, যদি তা হয় মানুষের মালিকানায়, মানুষের কর্মে, মানুষের কল্যাণে। দালাল সাংবাদিকদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
লেখকঃ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, কলামিস্ট ও সম্পাদক-প্রকাশক ‘দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল’। মোবাইলঃ ০১৭১৬৮৫৬৭২৮, seraj.pramanik@gmail.com