মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৭ অপরাহ্ন
অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক:
ওয়াক্ফ হচ্ছে কোন মুসলমান ধর্মীয়, দাতব্য বা সওয়াবের কাজে কোন সম্পত্তি স্থায়ীভাবে উৎসর্গ করাকে বুঝায়। আপনি পরিবার ও বংশধরদের কল্যাণার্থে সম্পত্তি ওয়াক্ফ করতে পারেন। বংশধরদের মৃত্যুতে সম্পত্তিটি পুরোপুরি আল্লাহর বরাবরে চলে যাবে-এমন ওয়াকফ্ও করতে পারেন। ওয়াক্ফ লিখিতভাবেও করা যেতে পারে, আবার মৌখিকভাবেও করা যেতে পারে। যিনি ওয়াক্ফ করেন, তাকে ওয়াক্ফি এবং যার উপর ওয়াক্ফ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়, তাকে মোতওয়াল্লী বলা হয়। আপনি আপনার জীবনকালে অথবা অসিয়তের মাধ্যমে ওয়াক্ফ সৃষ্টি করে যেতে পারেন।
অসিয়তের মাধ্যমে ওয়াকফ করা হলে অথবা মৃত্যু শয্যায় ওয়াক্ফ করা হলে মোট সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগের অধিক ওয়াক্ফ করা যাবে না। তবে মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশগন সম্মত হলে সমুদয় সম্পত্তির উপরই ওয়াক্ফ বলবত হতে পারে। তবে এই অসিয়ত ওয়াকিফ তার মৃত্যুর পূর্বে যেকোন সময় তা প্রত্যাহার করতে পারেন। কিন্তু সাধারণ ওয়াক্ফের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না। মনে রাখবেন, কোনও জমি বা অন্য কোনও সম্পত্তি স্মরণাতীতকাল হতে মসজিদ বা গোরস্থান রক্ষণাবেক্ষণ অথবা অনুরূপ অন্য কোনও ধর্মীয় কার্য্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকলে, কোনও প্রকাশ্য ঘোষণার প্রমাণ না পাওয়া গেলেও তা ওয়াক্ফ সম্পত্তি বলে গণ্য হবে। ওয়াক্ফনামার শর্ত ব্যতিরেকে আদালতের অনুমতি ব্যতীত কোন মোতওয়াল্লী কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি বিক্রয়, রেহেন, বিনিময় করিতে পারবেন না। ১৯৬২ সালে ওয়াকফ অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। বর্তমানে এই আইনের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালিত হয়।
ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়াকফ প্রশাসকের একটি অফিস আছে। পরিচালনা কমিটি গঠন ও ওয়াক্ফ তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের ভূমিকা আছে। ওয়াক্ফ দলিলের রেজিস্ট্রেশন ফিস দিতে হয় হস্তান্তরিত সম্পত্তির দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ১% টাকা। সাথে ষ্ট্যাম্প শুল্ক দিতে হয় ২% টাকা। ২০০ টাকার ষ্ট্যাম্পে হলফনামা, সাথে ই-ফিস দিতে হবে ১০০ টাকা। লেখা খরচ এনফি ও এনএনফি ফিস দিতে হবে।
লেখকঃ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা ও পিএইচডি গবেষক। মোবাইলঃ ০১৭১৬৮৫৬৭২৮, ইমেইলঃ seraj.pramanik@gmail.com
বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখতে পারেন: