শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন

ঘোষনা :
  সম্পূর্ণ আইন বিষয়ক  দেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা   দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল এর  পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা   । 
সংবাদ শিরোনাম :
হিন্দু আইনে বিধবা স্ত্রী ও কে কতটুকু সম্পত্তি পাবে?

হিন্দু আইনে বিধবা স্ত্রী ও কে কতটুকু সম্পত্তি পাবে?

এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক
অনেকে বলে থাকেন হিন্দু বিধবা স্ত্রী সম্পত্তি পাবে না, কন্যা সম্পত্তি পাবে না ইত্যাদি নানা মুখোরোচক গল্প প্রচলিত রয়েছে। হিন্দু আইনে কে কতটুকু সম্পত্তি পাবে, আর কে পাবে না, সম্পত্তি ভাগ পাওয়ার ক্রমবিন্যাস নিয়ে আলোচনা করতে—।১৯৩৭ সালের হিন্দু আইন অনুযায়ী মেয়েরা কোন সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতেন না। তবে বিধবা হওয়ার পর সন্তান নাবালক থাকা অবস্থায় শুধু বসতি বাড়ির অধিকারী হতেন। সম্প্রতি মহামান্য হাইকোর্ট এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হিন্দু বিধবা নারীরা শুধু বসতভিটা নয়, স্বামীর সব সম্পত্তিতে ভাগ পাবেন। প্রয়োজনে বিক্রি করতে পারবেন, বিলিবন্টন, উইল, দান সব কিছুই করতে পারবেন। মনে রাখবেন এক পুত্র সন্তানের সমান ভাগ পাবেন বিধবা স্ত্রী। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানে হিন্দুদের মধ্যে দু’ধরনের উত্তরাধিকার পদ্ধতি চালু রয়েছে। একটি দায়ভাগ পদ্ধতি, অপরটি মিতাক্ষরা পদ্ধতি। বাংলাদেশে দায়ভাগ পদ্ধতি প্রচলিত। স্বাভাবিকভাবে পুত্রই পিতার সমগ্র সম্পত্তির একক উত্তরাধিকারী হয়।

পুত্র একাধিক হলে তারা সকলে মিলে পিতার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার পায়। প্রথম যে ছয়জন মৃতের সম্পত্তির উত্তরাধিকার পায়, তারা হচ্ছে: ১. পুত্র, ২। পুত্র না থাকলে নাতি, ৩। নাতি না থাকলে নাতির পুত্র, ৪। মৃতের বিধবা স্ত্রী, ৫। নাতির বিধবা স্ত্রী, ৬। নাতির পুত্রের বিধবা স্ত্রী। মনে রাখবেন নাতি এবং নাতির পুত্রের ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বের মতবাদ প্রচলিত। অর্থাৎ পুত্র জীবিত না থাকলে এরা পাবে। আর বিধবা একের অধিক হলে সবাই একত্রে এক পুত্রের সমান অংশ পায়। পুত্র, নাতী, নাতীর পুত্র কেউ না থাকলে মৃত স্বামীর সমস্ত সম্পত্তি তার বিধবা জীবন স্বত্বে পায়। বৈধ প্রয়োজনে বিধবার সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আপনাদের মাঝে আরও পরিস্কার হয়ে উঠবে। ‘ক ‘তিন পুত্র, তার বিধবা স্ত্রী এবং পূর্বে মৃত পুত্রের এক পুত্র এবং তার মৃত পুত্রের বিধবা স্ত্রী রেখে মারা যান৷ এখানে ক এর ত্যক্ত সম্পত্তি পাঁচ ভাগ হবে। প্রত্যেক পুত্র এবং তার ক এর বিধবা স্ত্রী এই ৪ জনের প্রত্যেকে ১/৫ অংশ পাবে। অবশিষ্ট ১/৫ অংশ তার মৃত পুত্রের পুত্র ও বিধবার মধ্যে সমানভাবে পাবে।
উপরে যে ছয়জনের কথা বলা হলো অর্থাৎ পুত্র, নাতী, নাতীর পুত্র, বিধবা, মৃত পুত্রের বিধবা এবং মৃত নাতীর বিধবা এরা উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে গণ্য। এরা বেঁচে থাকলে আর কেউ মৃতের সম্পত্তি পায় না।উপরের ছয়জন না থাকলে কন্যা পিতার সম্পত্তি পায়। সে এ কারণে সম্পত্তি পায় যে তার মৃত পিতাকে পিন্ড দেবার জন্য সে পুত্র প্রসব করতে সক্ষম। তবে সে কন্যা উত্তরাধিকার পাবে না যে পুত্রবতী নয় বা পুত্র জন্ম দিবার শক্তি যার নাই বা যে বন্ধ্যা এবং যে শুধু কন্যাবতী। তবে যে কন্যা কোন পুরুষ শিশুকে পুত্ররূপে দত্তক নিলে সে উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হয় না। সুতরাং সকল কন্যা পিতার ত্যক্ত স্বত্বে সম্পত্তি পায় না। প্রথমে আসে অবিবাহিতা কন্যা। কন্যা অবিবাহিতা থাকলে, সে একাই পিতৃত্যক্ত সকল সম্পত্তি সমুদয়ভাবে পায়; ঐরকম কেউ না থাকলে পায় পুত্রবতী কন্যা। পুত্রবতী কন্যা অন্যান্য বন্ধ্যা বা পুত্রহীনা কন্যাক বঞ্চিত করে৷ অবিবাহিত বা পুত্রবতী কন্যা না থাকলে এবং সন্তানহীনা বিধবা কন্যা না থাকলে চাচার ছেলে সম্পত্তি পাবে। ৮ নম্বরে অবস্থান কন্যার পুত্র ৯. পিতা, ১০. মাতা, ১১. ভাই, ১২. ভাইয়ের পুত্র

১৩. ভাইয়ের পুত্রের পুত্র ১৪. ভগ্নির পুত্র ১৫. পিতার পিতা, ১৬. পিতার মাতা। আরও একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আপনাদের মাঝে পরিস্কার হয়ে উঠবে। রাম তার ১ পুত্র এবং সহোদর ভাই রেখে মারা গেল। তালিকা অনুযায়ী রামের পুত্র রামের সমস্ত সম্পত্তি পাবে। কারণ পুত্রের স্থান তালিকাতে ১নং আর ভাইয়ের স্থান ১১ নম্বরে। উপরে উত্তরাধিকারী পাওয়া গেলে নীচের কেউ উত্তরাধিকারী হবে না।

 

 

এই সংবাদ টি সবার সাথে শেয়ার করুন




দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।  © All rights reserved © 2018 dainikinternational.com
Design & Developed BY Anamul Rasel