শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ন
মোঃ আবু সুফিয়ান শান্তি :ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে কনকনে শীত আর কুয়াশা উপেক্ষা করে বোরো চাষের জমি প্রস্তুত ও চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছে উপজেলার নজরুল, টিটো, আশা, লিটন, সেলিম, শিপন, জামির সহ কয়েক হাজার কৃষক।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ইরি বোরো ধান রোপনে নিয়ে গ্রামে গ্রামে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন।
কেউবা আবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত রয়েছেন। এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে, কৃষকের কাছে হার মানছে পৌষের শীত, লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে ধানের আবাদ। গত কয়েক দিন ধরে হঠাৎ করেই বেড়েছে কুয়াশা ও শীতের দাপট।
অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় জনজীবনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সকালে দেরি করে খুলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সন্ধ্যার পরপরই অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হওয়ায় চারপাশ হয়ে যাচ্ছে জনমানবহীন। কিন্তু যারা মাঠে সোনা ফলাবেন তাদের স্থাবিরতা নেই। হাড়কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোরে কনকনে শীতে মাঠে নেমেছেন গ্রামের কৃষকরা।
শীত সব সময় তাদের কাছেই যেন হার মানে। উপজেলার চাষিরা বলছে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা তাদের। এবার বেশি রোপণ করেছেন ব্রি ধান ৫০,৬৩,৮১,৮৮,৮৯,৯২,১০০ স্থানীয় মিনিকেট, রডমিনি, বাঁশমতি সহ বিভিন্ন জানতে ধান। শনিবার ১৩ই জানুয়ারি সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার মধ্যেও কৃষকরা দলবেঁধে বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। জানতে চাইলে কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন,শীতের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে চলবে।
আমরা এ সময়ে বসে থাকলে পরিবার ও দেশের মানুষের পেটে ভাত জুটবে কিভাবে।তিনি আরো বলেন, আমরা বসে থাকলে সমস্যা শুধু আমদের হবে না, গোটা দেশের সমস্যা হবে। মাঠের পর মাঠ ফসল না লাগালে মানুষ খাবে কী। রঘুনাথ পুর গ্রামের মাঠে বোরো ধানের চারা নিয়ে যাচ্ছিলেন মিঠু ও আলম নামের দুই কৃষক। তারা বলেন, শুনেছি পৌষ মাঘের শীতে নাকি বাঘ কাঁপে।
বাঘ কাঁপা শীত শুরু হয়ে গেছে। বিকেল থেকেই কুয়াশা শুরু হয়। রাতে টিনের চালে টুপটাপ শব্দে বৃষ্টির মতো ঝরে কুয়াশা। সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে গেলেও কুয়াশাচ্ছন্ন থেকে যায় চারপাশ। তবে কুয়াশ বা শীত আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। প্রাকৃতিক বির্যয়ের সম্মুখীন না হলে কদিন পরেই মাঠের পর মাঠ হয়ে যাবে সবুজ ধান ক্ষেত। তার পর সোনার ফসলে শুরু হবে হাসির ঝিলিক।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার হুমায়ূন কবির জানান, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ইরি বোরো ধান রোপণের ধুম পড়েছে। চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৬১৭৯ হেক্টর ধরা হয়েছে। শতভাগ পুরোন হবে আশাবাদী। কেবল ৫% জমিতে রোপণ হয়েছে।
কৃষককে মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে কৃষি অফিস থেকে। তিনি আরো বলেন চারা রোপণ থেকে শুরু করে কেটে ঘরে উঠানো পর্যন্ত সার্বিক পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করা হবে।