অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক:
আপনি উত্তরাধিকারসূত্রে জমি পেয়েছেন কিংবা ধারদেনা, সঞ্চয় করে টাকা জমিয়ে অনেক কষ্ট করে একখ- জমি কিনেছেন। নামজারি বা মিউটেশনও করেছেন। খাজনা পরিশোধও করেছেন। মালিকানাসংক্রান্ত সব দলিল ও কাগজপত্র ঠিকঠাক আছে। কিন্তু এত সাধের জমিটির দখল নিতে পারছেন না। নিজের জমি, অথচ জমিটি আপনি ব্যবহার করতে পারছেন না বা করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এ সুযোগে আপনার মালিকানাধীন জমি অন্য কেউ এসে দাবি করছে কিংবা গায়ের জোরে কিছু অংশ বা পুরোটাই দখল করে নিয়েছে, নির্মাণ করেছে স্থাপনা। আপনার শতভাগ নিষ্কণ্টক জমি হলেও যে বা যারা জমি দখল করছে, তারাও জমির মালিকানা দাবি করছে কিংবা জাল কাগজপত্র তৈরী করেছে। এ রকমভাবে নিজের জমি যদি অন্যের দখলে চলে যায়, তাহলে কী করতে হবে?
জায়গাজমি বেদখল ঠেকাতে এবং জমি ফিরে পেতে তৈরী হয়েছে ভূমি অপরাধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩। ভূমি প্রতারণা, জালিয়াতি, অবৈধ দখলের মতো ১২টি অপরাধ চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের ৪(১) (ক থেকে ছ) ধারায় বলা আছে, অন্যের মালিকানাধীন জমি নিজের বলে দাবী বা প্রচার করলে, তথ্য গোপন করে জমি অন্যের নিকট বিক্রয় করলে, নিজের মালিকানার চেয়ে অতিরিক্ত জমি কারও নিকট সমর্পণ করলে, মিথ্যা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তির স্থলে অন্য ব্যক্তি সাজিয়ে জমি হস্তান্তর করলে, মিথ্যা বিবরণ সম্বলিত কোনো দলিল স্বাক্ষর বা সম্পাদন করলে, কর্তৃপক্ষের নিকট কোন মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে সে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ অনধিক সাত বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে।
৫(১) (ক থেকে ঙ) ধারা পর্যন্ত বলা আছে যে, কোনো ব্যক্তির ক্ষতি বা অনিষ্ট সাধন করা বা কোনো দাবি বা অধিকার সমর্থন করা অথবা কোনো ব্যক্তিকে কোনো সম্পত্তি পরিত্যাগ বা চুক্তি সম্পাদন করিতে বাধ্য করা অথবা প্রতারণা করা যেতে পারে এইরূপ অভিপ্রায়ে কোনো মিথ্যা দলিল বা কোনো মিথ্যা দলিলের অংশবিশেষ প্রস্তুতকরণ করলে, মিথ্যা দলিল প্রস্তুতকরণ করলে, অসাধু বা প্রতারণামূলকভাবে কোনো ব্যক্তিকে কোনো দলিল স্বাক্ষর, সিলমোহর, সম্পাদনা বা পরিবর্তন করিতে বাধ্য করলে অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদ- ও অর্থদ-ে দ-নীয় হইবেন।
এ মামলা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে দাখিল করলে আদালত ১. আসামীদের বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করতে পারেন কিংবা তদন্ত দিতে পারেন কিংবা আদালতের কাছে প্রাথমিকভাবে সত্যতা প্রমাণিত না হলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দিতে পারেন। মামলার অন্যান্য কার্যক্রম ফৌজদারী কার্যবিধির পদ্ধতি অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
লেখকঃ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা, আইনের শিক্ষক ও আইন গবেষক। মোবাইলঃ ০১৭১৬৮৫৬৭২৮, ইমেইলঃ seraj.pramanik@gmail.com
বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখতে পারেনঃ
https://youtu.be/JOESAGI3Bgw
সম্পাদক ও প্রকাশক : এ্যাডভোকেট পি. এম. সিরাজুল ইসলাম ( সিরাজ প্রামাণিক)
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :কুষ্টিয়া আদালত চত্ত্বর, খুলনা, বাংলাদেশ।
মোবাইল : 01716-856728, ই- মেইল : seraj.pramanik@gmail.com নিউজ: dainikinternational@gmail.com