মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৫ অপরাহ্ন
এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক:
কেউ যদি আদালতে আদেশ অমান্য করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে রয়েছে আইনী প্রতিকার। বিশেষ করে দেওয়ানী আদালতের আদেশ, নিষেধাজ্ঞা, রায় বা ডিক্রি ভঙ্গ করলে ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ভায়োলেশন মোকদ্দমা করে প্রতিকার নেয়ার সুযোগ রয়েছে।
কোনো মামলার বিরোধীয় বিষয় নিয়ে যদি কোন পক্ষ কর্তৃক ধ্বংস, ক্ষতিগ্রস্থ কিংবা সম্পত্তি বেচা-বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে আদালত উক্ত প্রচেষ্টা রোধ করতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতে পারে। কিন্তু কেউ যদি আদালতের এ আদেশ অমান্য করে, তাহলে আদালত দেওয়ানী কার্যাবিধির ৯৪ (ক) এবং ৩৯ আদেশের ২(৩) বিধি অনুযায়ী তাকে অনধিক ৬ মাস দেওয়ানী কারাগারে আটক রাখার নির্দেশসহ অর্থদন্ড দিতে পারেন।
উচ্চ আদালত বলছেন, নিষেধাজ্ঞা আদেশ অমান্য করার দায়ে ভায়োলেশন মামলা করা যায়, তবে আদালত অবমাননার মামলা রক্ষণীয় নয়। কিন্তু ভায়োলেশন মামলাায় বিবাদী ইচ্ছাকৃতভাবে, না অজ্ঞাতবশতঃ অমান্য করেছে, সে বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে মর্মে-৫৩ ডিএলআর, ৭০ (এডি) একটি সিদ্ধান্ত রয়েছে।
তবে বিবাদী যে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করেছে এটা কিন্তু বাদীকে অর্থাৎ-দরখাস্তকারীকেই প্রমাণ করতে হবে যে তিনি জ্ঞাতসারে আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করেছেন। (৪৫ DLR ৭১৮)।
ভায়োলেশন মামলায় দেওয়ানী আদালত এমনভাবে ইস্য্যু ফ্রেম করবেন যাতে ফৌজদারী মামলায় চার্জের সব উপাদানগুলো সেখানে নিহিত থাকে। এরকম পন্থায় ইস্যু ফ্রেম করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিবাদী যাতে নিজেকে ডিফেন্ড করা থেকে কোনরুপ বঞ্চিত না হয় কারণ এটি এখন দেওয়ানী মামলার রুপ থেকে ফৌজদারী মামলায় রুপ পরিগ্রহ করছে ; (৯ ডিএলআর ৪৪৪)।
ভায়োলেশন মামলার প্রকৃতি হচ্ছে ফৌজদারি প্রকৃতির ক্ষমতা। ভায়লেশন মামলায় আসামীকে মূল দন্ড হিসাবে কারাদন্ডের আদেশ দিতে হলে সচরাচর দেওয়ানী মামলায় অনুসৃত নিয়মের বাইরে ও আরো কিছু নিয়ম মানতে হয় যা অনেকটা ফৌজদারী আদালতের বিচারিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
লেখকঃ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা ও আইন গবেষক। Email: seraj.pramanik@gmail.com, মোবাইলঃ ০১৭১৬৮৫৬৭২৮